Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৯ August ২০২৪

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সভাকক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও প্রতিনিধির সাথে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত


প্রকাশন তারিখ : 2024-08-15

বিগত ১৪ আগস্ট ২০২৪ তারিখে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সভাকক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও প্রতিনিধির সাথে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় । উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন জনাব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ এবং সহকর্মীবৃন্দকে স্বাগত ও শুভেচ্ছা জানিয়ে সভাপতি সভার কার্যক্রম শুরু করেন। বক্তব্যের শুরুতে সভাপতি সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বীর শহীদদের প্রতি এবং যারা উক্ত আন্দোলনে বিভিন্নভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। অতঃপর বীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং তাঁদের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

পারস্পরিক পরিচিতির পর কমিশনের সদস্য (এ্যাডভোকেসি, পলিসি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক) জনাব মোঃ হাফিজুর রহমান প্রতিযোগিতা আইন এবং বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন এর কার্যাবলির ওপর পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২ প্রণয়নের উদ্দেশ্য, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন এর গঠন, কমিশনের অর্জন, কমিশন কর্তৃক অনুসন্ধান, তদন্ত, মামলা পরিচালনা ইত্যাদি বিষয় উক্ত উপস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

কমিশনের উপস্থাপনার পর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ প্রতিযোগিতা আইন ২০১২, কমিশনের বিচারিক কার্যক্রমের পদ্ধতি, কমিশনে বিচারাধীন ও নিষ্পত্তিকৃত মামলার বিবরণ, কমিশনে চলমান অনুসন্ধান ও তদন্ত কাজের বিবরণ ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উপস্থাপন করেন। কমিশনের চেয়ারপার্সন এবং সদস্যমণ্ডলী উল্লিখিত বিষয়ে ব্যাখ্যামূলক জবাব উপস্থাপন করেন।

এ সব মামলার বিবরণ সাধারণ পাঠকের বুঝার সুবিধার্থে আরো স্পষ্টভাবে প্রণয়ন করা প্রয়োজন বলে সম্মানিত নেতৃবৃন্দ পরামর্শ প্রদান করেন। সম্মানিত নেতৃবৃন্দ বড় বড় কোম্পানিগুলোর সিন্ডিকেশন রোধকরণ, বোতলজাত পানির অস্বাভাবিক মূল্যে বৃদ্ধির বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ, মার্কেটিং পলিসি/ফিলোসপি নির্ধারণ, মাঠ পর্যায়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২ এবং বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের কার্যাবলির বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধিকরণ, অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের মাধ্যমে স্বজনপ্রীতি/ দুর্নীতি না করার বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া এবং এ সংক্রান্ত সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ, বাস্তবতার নিরিখে প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২ সংস্কার/ সংশোধন, সেবা খাত বিশেষ করে বেসরকারি হাসপাতালসমূহ কর্তৃক অযৌক্তিক এবং অস্বাভাবিক চার্জ/ ফি আদায় বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ, পণ্য/ ভিত্তিক অথবা প্রয়োজনে ক্লাস্টার করে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনসমূহের বৈঠক করে পণ্য / সেবার বাজার ব্যবস্থাপনার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণের জন্য দাবী উত্থাপন করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক জনাব বিন ইয়ামীন মোল্লা বলেন,  বহু ত্যাগ-তিতীক্ষা ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে একটি স্বৈরাচার উৎখাতের মাধ্যমে বর্তমান ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। এ ব্যবস্থার উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১১-০৮-২০২৪ তারিখে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাথে মতবিনিময় করে দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি রোধকল্পে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর/সংস্থা কর্তৃক প্রয়োজনী  ব্যবস্থা গ্রহণ অন্যথায় পদত্যাগ করার জন্য সাত দিনের আল্টিমেটাম প্রদান করা হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি দপ্তর যেমন: কৃষি বিপণন অধিদপ্তর (বাজারে গিয়ে দাম নির্ধারণ করে দেখার বিষয়ে ভূমিকা রাখবে), মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় (ডিম, মাংস, দুধ, পশুখাদ্য এবং অন্যান্য সমজাতীয় পণ্যের মূল্য নির্ধারণের ভূমিকা রাখবে), বিএসটিআই (জাল সনদ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে), নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধ কল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে), বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে), এনবিআর (সিন্ডিকেট প্রতিহত করার ক্ষেত্রে এবং অবৈধভাবে ট্যাক্স মওকুফ করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে) এর সাথে সমন্বয় করার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন। বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের পক্ষ থেকে সম্মানিত শিক্ষার্থীবৃন্দকে এ মর্মে অবহিত করা হয় যে, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ২০১৬ সালে গঠিত হয়। প্রথম দিকে নতুন প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। পরবর্তী পর্যায়ে কোভিড পরবর্তীকালে ২০২১ সাল থেকে কমিশনের আইনি কার্যক্রম আরম্ভ করা হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়, কমিশনের সিভিল কোর্ট পরিচালনার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীবৃন্দ প্রত্যক্ষ করতে পারেন এবং কমিশনে সরকারের অনুমোদনক্রমে ইন্টার্নশিপও করতে পারে। কমিশনের কাজ কর্মের চ্যালেঞ্জসমূহও সভায় তুলে ধরা হয় যার মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল এবং বিদ্যমান জনবলের ক্ষমতার অভাব। সক্ষমতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত কারিগরি সহায়তার একটি প্রস্তাব সরকারের নিকট পেশ করা হয়েছে। উক্ত চ্যালেঞ্জসমূহ কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে কমিশনের পক্ষ থেকে ছাত্র নেতৃবৃন্দের সহায়তা কামনা করে এ মর্মে প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয় যে, ছাত্র নেতৃবৃন্দের সহায়তায় প্রতিযোগিতা কমিশনের কার্যাবলীকে জনস্বার্থে আরো দৃশ্যমান করা সম্ভব হবে। ছাত্র নেতৃবৃন্দের সাথে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের আজকের এই মতবিনিময় সভা ব্যবসায়ী সংগঠনসমূহকে একটি বার্তা দিবে বলেও কমিশনের পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।